
উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
রোহিঙ্গা নারীদের সুরক্ষায় বিশ্ব ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সফররত জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি ও ইউএন উইমেন’র নির্বাহী পরিচালক ড ফুমঝিলি মালাম্ব-এনজিকোকা। জাতিসংঘের নারী বিষয়ক সংস্থা ইউএন-উইমেনের প্রধান ওই নির্বাহী বলেন, আমার মনে হয় রোহিঙ্গা নারীদের রক্ষায় বিশ্ব ব্যর্থ হয়েছে। তাদের দেশও (মিয়ানমার) গুরুতরভাবে এ কাজে ব্যর্থ। পাঁচ দিনের বাংলাদেশ সফরের সমাপনী লগ্নে গতকাল রাজধানীর একটি তারকা হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি রোহিঙ্গা নারীদের প্রতিবন্ধকতাগুলো মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার তাগিদ দেন। বলেন, আমরা আমাদের সেরা কাজটা করে যাচ্ছি। কিন্তু পরিস্থিতি অনেক খারাপ হওয়ায় আমাদের সেরাটাও কখনো কখনো পর্যাপ্ত হচ্ছে না। সুতরাং সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। ইউএন ওমেন মিয়ানমারে কাজ করার ক্ষেত্রে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে জানিয়ে ড. ফুমঝিলি বলেন, রোহিঙ্গা নারীদের সাহায্য করতে ক্ষুদ্র ঋণ দিতে আমরা আগ্রহী। বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণে উৎসাহ দিতে ইউএন উইমেন বাংলাদেশে কাজ করছে বলে জানান ওই বিশ্ব সংস্থার নির্বাহী পরিচালক। তিনি বলেন, যেহেতু নির্বাচন আসছে, তাই নারীদের ভোটে অংশ নিতে ও নারী নেতৃত্বকে উৎসাহ দিতে আমরা কাজ করছি। আমি এখানে এ নিয়েও কথা বলেছি। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিশেষ পরিস্থিতিতে বিয়ে দেয়ার বিধান থাকা ‘বাল্যবিয়ে নিরোধ বিল ২০১৭’ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন ড. ফুমঝিলি। বলেন, অনেক ধরনের বিশেষ পরিস্থিতি থাকায় ওই বিধান আইনটির সৎ উদ্দেশ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএন-উইমেনের প্রতিনিধি সোকু ইশিকাওয়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ইউএন উইমেন গঠনের পর এই প্রথম প্রতিষ্ঠানটির কোনো শীর্ষ ব্যক্তি (নির্বাহী) বাংলাদেশ সফরে আসেন। গত বুধবার তিনি ঢাকায় পৌঁছার পরপরই ছুটে যান রোহিঙ্গা আশ্রিত কক্সবাজার এলাকায়। সেখানে দু’দিনের বেশি সময় অবস্থান করে ১০ লাখ বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের অবস্থার খণ্ডচিত্র সরজমিন দেখেন। তিনি বর্মী নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া অনেক রোহিঙ্গা নারীর সঙ্গে কথা বলেন। তাদের ওপর চালানো বর্বরতার রোমহর্ষক কাহিনীগুলো নিজের কানে শুনেন। এরপর ঢাকায় ফিরে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। পররাষ্ট্র এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তার বৈঠক হয়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, নাগরিক সমাজ ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেন তিনি। ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে উল্লিখিত বৈঠক ও মতবিনিময়সহ তার পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে অবহিত করেন।
পাঠকের মতামত